Edit Content
খুলনা, বাংলাদেশ
বুধবার । ৬ই আগস্ট, ২০২৫ । ২২শে শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

লোহাগড়ায় শিশু নুসরাত হত্যা মামলায় সৎ মায়ের যাবজ্জীবন

লোহাগড়া প্রতিনিধি

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় শিশু নুসরাত জাহান রোজা (৩) হত্যার ঘটনায় সৎ মা জোবাইদা বেগমকে (২০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমান অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৬ আগষ্ট) দুপুরে নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন নিগার এ রায় ঘোষণা করেন। তবে আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) এডভোকেট আজিজুল ইসলাম খুলনা গেজেটকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত জোবাইদা বেগম লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গিলাতলা গ্রামের সজীব কাজীর স্ত্রী।

আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে মামলার বাদী আবুল খায়ের কাজীর ছেলে সজিব কাজীর সাথে তার প্রথম স্ত্রী রুপা খাতুনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। সেখানে সজিবের ৫ বছরের ছেলে ইয়াসিন ও ৩ বছরের মেয়ে নুসরাত জাহান রোজা তার দাদা মামলার বাদীর সাথে বসবাস করতো। সজিব কাজী তার ছেলে মেয়ের কথা চিন্তা করে পুনরায় জোবাইদা বেগমকে বিবাহ করে।

ঘটনার দিনে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৭ তারিখে সকালে নুসরাতকে তার বড় ভাই ইয়াসিন মারধর করলে সে কান্না করে। নুসরাতের কান্না থামাতে সৎ মা জোবাইদা বাড়ির একটি কক্ষে নিয়ে যায়, তবুও শিশুটি কান্না করতে থাকলে এক পর্যায়ে তার সৎ মা নুসরাতের মুখ চেপে ধরেন। এতে নুসরাত শ্বাসরোধে মৃত্যুবরণ করে। নুসরাতের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে সেটি বুঝতে পেরে জোবায়দা তাকে কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে তার শ্বশুর মো. খায়ের কাজীর বসত ঘরের বারান্দার খাটে শুয়ে রাখে।

পরে দাদা মো. খায়ের কাজী বাইরে থেকে বাড়িতে এসে নুসরাতকে গোসল করানোর জন্য ডাকাডাকি করে। দাদী পান্না বেগম নুসরাতকে না পেয়ে সৎ মা জোবায়দা বেগমকে জিজ্ঞাসা করে নুসরাত কোথায় তাকে খুঁজে পাচ্ছি না। তখন জোবায়দা বেগম শাশুড়ীকে বলেন নুসরাত তার দাদার বারান্দায় ঘুমাচ্ছে। তখন দাদী পান্না বেগম বারান্দায় গিয়ে নুসরাতকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় পরিবারের লোকজন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে প্রথমে লোহাগড়া থানায় নিয়ে আসেন।

পরবর্তীতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ঘটনার দিনেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নুসরাতের বাবা সজীব কাজী ও সৎ মা জোবায়দা বেগমকে আটক করে লোহাগড়া থানা পুলিশ। তবে নুসরাতের বাবা সজীব কাজীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরের দিন এ ঘটনায় নিহত নুসরাত জাহান রোজার দাদা মো. খায়ের কাজী সৎ মা জোবায়দা বেগমকে একমাত্র আসামি করে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে রায়ের ধার্যদিন বুধবার দুপুরে রায় ঘোষণা করেন আদালত।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন